ইউটিউব এসইও কি? ইউটিউব SEO কিভাবে করবো?
হ্যালো বন্ধুরা এই পোস্টে আমরা ইউটিউব এসইও (YouTube SEO ) সম্পর্কে আলোচনা করবো।[YouTube SEO Bengali Tutorial]
ইউটিউব পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন ও সর্ববৃহৎ ভিডিও সার্চ ইঞ্জিন।বর্তমানে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা দিন বেড়েই চলেছে।
Alexa (২০১৮)এর একটি তথ্য অনুযায়ী একজন ইউসার ইউটিউবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১১ মিনিট ২৪ সেকেন্ড সময় ব্যায় করে।
তাই ডিজিটাল মার্কেটিং হোক কি ব্র্যান্ড মার্কেটিং অন্যান্য প্রথাগত মাধ্যমের থেকে ইউটিউবের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে।
আপনি ব্লগার হন আর কোন কোম্পানির হয়ে কোনো প্রোডাক্ট কে বিপণন করা যাই হোক না কেন প্রতি করুন ভিডিও মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ইউটিউব আজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু অনেকে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খোলার পর ঠিক বুঝতে পারেন না ইউটিউবে ভিউ বাড়বে কিভাবে?ইউটিউব চ্যানেলটির দ্রুত কি ভাবে সাবস্ক্রাইবার বাড়বে?
এর জন্য দরকার সঠিক ইউটিউব এসইও (YouTube SEO ) তাই এই সমস্যা নিবারন করার জন্যই আজকে আমাদের এই পোস্টটি অনেক সাহায্য করবে।
এই পোস্টটিতে আমরা সুনির্দিষ্ট জানবো কোন পদ্ধতিতে এগুলো আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওগুলি অনেক ভিউ পাবে এবং এবং চ্যানেলটি খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি করবে।
তো চলুন শুরু করা যাক।
ইউটিউব ভিডিও SEO টিপস
১. কিওয়ার্ড রিসার্চ(Keyword Research)
ইউটিউব এসইও (YouTube SEO ) এর জন্য সঠিক কিওয়ার্ড রিসার্চ খুবই জরুরি। আপনি যদি আপনার ভিডিও এর জন্য সঠিক কীওয়ার্ড নির্বাচন না করেন সেক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব ভিডিওটি সঠিক এবং বেশি ভিউ পাবে না তাই সে ক্ষেত্রে আমাদের উচিত কোনো ভিডিও আপলোড করার আগে সঠিক ভাবে কীওয়ার্ড বেছে নেয়া।
এখন মনে রাখতে হবে ইউটিউব এসইও এর জন্য কীওয়ার্ড আর সাধারণ গুগল এসইও এর জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চ কিন্তু একটু আলাদা। ইউটিউব এসইও করতে হলো আপনাকে একটু আলাদা ভাবে কীওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে।
এর জন্য অনলাইনে যে কটি টুল আছে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো TubeBuddy. TubeBuddy. মূলত ইউটিউব এসইও এর জন্য ছোট থেকে বোরো সব ইউটিউবর রা ব্যাবহার করে।
Video Source:TubeBuddy
এখানে কীওয়ার্ড রিচার্জ করার জন্য অনেক অপশন রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে TubeBuddy.মূলত ক্রোম ব্রাউজারএ ইন্সটল করে নিয়ে কিওয়ার্ড এক্সপ্লোরার মাধ্যমে আপনারা সঠিক কীওয়ার্ড নির্বাচন করতে পারবেন।
TubeBuddy এর মধ্যে থাকা কীওয়ার্ড এক্সপ্লোরারের ক্লিক করে আপনি কীওয়ার্ড এর কম্পিটিশন এবং অপটিমাইজেশন স্কোর সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখাবে।
তাছাড়াও TubeBuddy এর একেবারে উপরের দিকে এদের একটি overall score বলে একটি অপশন থাকে। এর থেকে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার টার্গেট করা কী-ওয়ার্ডটি সঠিক ভিউ পাবে কিনা বা ওই কীওয়ার্ড টি ব্যাবহার করলে আপনার ভিডিওটির ইউটিউব এসইও এর জুন কতটা কার্যকরী হবে।
এছাড়াও কিওয়ার্ড রিসার্চের জন্য আপনি ইউটিউব এর অটোসাজেস্ট অপশন ব্যবহার করতে পারেন আপনি যদি কোনো একটি কিওয়ার্ড ইউটিউব সার্চ বক্সে টাইপ করেন তখন ইউটিউব আপনা থেকেই অনেকগুলি সাজেশন আপনাকে দেখিয়ে দেয়।
এই সাজেশনগুলি (কিওয়ার্ডগুলো )আপনি আপনার টাইটেলে ব্যবহার করে আপনার ইউটিউবে ভিউ অনেক বাড়াতে পারেন।
ইউটিউব এর অটোসাজেস্ট ব্যাবহার করার সুবিধা হলো ইউটিউব অটোসাজেস্ট সব সময় ট্রেন্ডিং বিষয় যেগুলো ইউটিউবে বেশিবার সার্চ করা হয় সেই বিষয়গুলির কীওয়ার্ড দেখায়।
২. সঠিক ইউটিউব টাইটেল নির্বাচন(Use Appropriate Title)
ইউটিউব এসইও এর ক্ষেত্রে কীওয়ার্ড যেমন জরুরি, ইউটিউব ভিডিও টাইটেল ও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক টাইটেল আপনার ইউটিউব ভিডিও গুলো কে ভালো rank করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে ইউটিউব টাইটেল গুলি দেওয়ার আগে মনে রাখতে হবে আমাদের কাঙ্খিত কী-ওয়ার্ডটি যেন টাইটেলে সর্বপ্রথম থাকে।
এই সঙ্গে যদি টাইটেলে ব্র্যাকেট ইউজ করি আমাদের ভিডিও টাইটেল টি আরো আকর্ষক হয়। যেটি বেশি CTR পেতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন:এসইও করে আয়
৩. সঠিক ইউটিউব ট্যাগ ব্যবহার
ইউটিউব ট্যাগ কি?
ইউটিউব ট্যাগ মূলত কীওয়ার্ড।তবে ইউটিউব ট্যাগ কে কিবোর্ডস এর একটি প্রকারভেদ বলা যেতে পারে যেগুলো আপনার ইউটিউব ভিডিও এর বিষয়বস্তু কে ভুগতে সাহায্য করে।
ইউটিউব ট্যাগ ইউটিউব এসইও এর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আপনার ভিডিওতে ভালো ট্যাগ ব্যাবহার করে ইউটিউব কে বলতে পারেন আপনার ভিডিওটি কোন বিষয় এর।
যদিও বর্তমানে গুগল বা ইউটিউব অনেক জটিল বিষয়ও সহজে বুঝে নেই তবু ইউটিউব ট্যাগ এখনো সমান কার্যকরী।
অনেকেই মনে করেন যে ইউটিউব ভিডিও ভিউ এর ক্ষেত্রে ইউটিউব সার্চ সবচেয়ে বেশি ভিউ দেয় কিন্তু অনেকেই জানেন না যে ইউটিউব এর যে suggested video রয়েছে যেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিউ পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ইউটিউব ট্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
TubeBuddy,chrome-extension ব্যাবহার আপনারা সহজেই কোন ট্রেন্ডিং ভিডিও এর ট্যাগ দেখতে পারবেন সেই ক্ষেত্রে আপনারা ঐগুলিকে আপনার ভিডিওতে ব্যবহার করে আপনার ভিডিওর ভিউ বাড়াতে পারবেন।
কিন্তু এক্ষেত্রে মনে রাখবেন এই ভিডিওতে চার থেকে পাঁচ এর বেশি ট্যাগ ব্যবহার করা উচিত না।
এই ট্যাগ ব্যবহার করার কিছু নিয়ম রয়েছে। আমাদের সাজেশন হবে আপনার ভিডিওটি যে কীওয়ার্ডটি টার্গেট করা বানানো সেটি এবং তার সঙ্গে আরো দুটি সহায়ক কিওয়ার্ড প্রথম তিনটির মধ্যে রাখা উচিত।এরপর ক্যাটেগরি কিওয়ার্ড রাখলে খুব ভালো ফল যায়।
আরো পডুন : ইউটিউব এ সাবস্ক্রাইব কিভাবে করে?
৪. উপযুক্ত ইউটিউব ডেসক্রিপশন(YouTube Tags)
ইউটিউবে ডেসক্রিপশন ইউটিউব এসইও এর জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ইউটিউব ডেসক্রিপশন সবসময় একশর বেশি শব্দের হওয়া উচিত এবং প্রথম ১০০টি শব্দের মধ্যে বা প্রথম একটি বা দুটি লাইনের মধ্যে আপনার টার্গেট কীওয়ার্ড থাকা উচিত। এক্ষেত্রে ইউটিউব প্রথমেই বুঝতে পারবে আপনার ভিডিও এর বিষয়বস্তু কি ও আপনার ভিডিওটি ইউটিউব সার্চ এ প্রথমের দিকে দেখাবে।
৫.ইউটিউব Retention রেট
ইউটিউব Retention রেট বিষয়টি ইউটিউব এসইও এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন কোন একটি ভিডিও তৈরি করছেন তখন সেই ভিডিওটি যথেষ্ট অডিয়েন্স ধরে রাখতে পারছে কিনা এটা দেখে ইউটিউব আপনার ভিডিওটির মানের সম্পর্কে সংকেত দেয়। ইউটিউব Retentionবেশি মানে বেশি ভালো রাংকিং।
আমাদের পরামর্শ হলো আপনি যেকোন ভিডিও তৈরি করার আগে একটি স্ক্রিপ্ট আগে থেকে তৈরি করে নেবেন এবং প্রতিদিন ভিডিও আপলোড এর আগে সেই স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী আপনার গল্পটি কে সাজাবেন।
এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে ,আপনি যদি ইউটিউব এসইও নিয়ে কোন ভিডিও বানান তবে যদি সেই ইউটিউব ভিডিওতে এসইও এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস ,কিছু গুরুত্বপূর্ণ টুল,কিছু ভালো ইউটিউব এডিটিং টিপস এই সম্পর্কে যদি আলোচিত হয় তবে ইউটিউব Retention রেট বেড়ে যাবে।
৬. ইউটিউব ওয়াচ টাইম
ইউটিউব ওয়াচ টাইম ,ইউটিউব এসইও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। মোট কত সময়ের জন পিনার ভিডিও টি দেখা হলো সেটি ইউটিউবকে আপনার ভিডিও সম্পর্কে একটি ভালো সংকেত দেয়। বেশি ইউটিউব ওয়াচ টাইম মানে ভালো ভিউ।
আমাদের পরামর্শ হলো আপনি যদি কোনো ভিডিও আপলোড করেন সেটি কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের হয় এবং এই ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে আপনি কোন বিষয়কে খুবই গভীর ভাবে আলোচনা করবেন।
অনেক ছোট ছোট ভিডিও দেওয়ার থেকে একটি ভালো মানের বড় in-depth ভিডিও যদি আপনি চ্যানেলে নিয়মিত দেন সে ক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব ভিডিওগুলি সহজেই ভালো ভিউ পাবে।
৭. ইউটিউব কমেন্ট
আপনার ইউটিউব ভিডিওতে যদি অনেক ভালো ভালো কমেন্ট থাকে তখন ইউটিউব বুঝতে পারে আপনার ভিডিওটি যথেষ্ট engaging এবং সেক্ষেত্রে আপনার ভিডিওটি রাংকিং এ এটি অনেক সাহায্য করে। এখন এই ভালো ভালো কমেন্ট পাওয়ার জন্য আপনাকে আপনার ভিডিওতে যথেষ্ঠ পরিশ্রম করতে হবে।
আপনার ভিডিওতে আপনাকে প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে আপনার অডিয়েন্স এর সঙ্গে নিজেকে সংযুক্ত করতে হবে যদি আপনার ভিডিওতে অনেক multiple-choice এর প্রশ্ন উত্তর রাখেন তো আপনার অডিয়েন্সকে জিজ্ঞাসা করেন তো আপনার অডিয়েন্স সে সবসময় আপনার কমেন্টের দেবে।
এর ফলে ইউটিউব এর এনগেজমেন্ট বাড়বে। আমাকে মনে রাখতে হবে যে অনেক স্প্যাম কমেন্ট আসে কে বেছে বেছে রিপ্লাই করতে হবে বা স্প্যাম কমেন্ট হলে mark as spam বলতে হবে ।
৮.সঠিক thumbnail ব্যাবহার
ইউটিউব এসইও এর জন্য সঠিক thumbnail ব্যবহার খুব জরুরি। আপনার ইউটিউব thumbnail দেখে আপনার ভিডিওর মূল বিষয়বস্তু কি সেটি আপনার অডিয়েন্স বুঝতে পারে। ভালো thumbnail আপনার ভিডিওতে CTR rate বাড়াতে সাহায্য করে।
CTR rate (Click Through Rate )যত বেশি হবে আপনার ভিডিও এর ভিউ তত বাড়বে। ভালো thumbnail তৈরির জন্য ক্যানভা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন ফটো এডিটিং টুল যার সাহায্যে সহজেই আপনারা আপনাদের ইউটিউব এর জন্য কাঙ্ক্ষিত thumbnail পেয়ে যাবেন।
৯. শক্তিশালী ব্যাকলিংক
ওয়েবসাইটের মতো ভালো ব্যাকলিংক ইউটিউব এসইও এর ক্ষেত্রে পরোক্ষ ভাবে অনেক সাহায্য করে। যদিও ব্যাকলিংক সরাসরিভাবে আপনার ইউটিউব রেংকিং কে সাহায্য করে না কিন্তু তার পরেও আপনি যদি ভালো করে ব্যাকলিংক তৈরি করেন সেক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব ভিডিও গুলো গুগল সার্চের প্রথম পেজ এ চলে আসে সে ক্ষেত্রে ইউটিউব ভিডিওগুলি আপনার গুগল সার্চ থেকে অতিরিক্ত ভিউ পায়।
১০. ইউটিউব Video Embed
ইউটিউব ভিউ শুধু ইউটিউব সার্চ এবং ইউটিউব সাজেস্টেড ভিডিওর উপর নির্ভর করে না। আপনারা যদি আপনাদের ভিডিও গুলি আমাদের ওয়েবসাইট বা অন্য কোন আর্টিকেল পোস্ট করার সময় কিংবা অন্য কোনভাবে যদি এমবেড করা যায় সে ক্ষেত্রে সেই সমস্ত ইমবেডেড অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিউ পাবেন।
তাছাড়া যদি আপনার যদি কোনো ভালো একটি ই-মেইল subsciber তালিকা থাকে তো আপনার ইমেইল লিস্ট ব্যাবহার করে আপনার কাংখিত ইউটিউব ভিডিওটি শেয়ার করতে পারেন সে ক্ষেত্রে সরাসরি আপনার সাবস্ক্রাইবারের প্রতিবার আপনি ইউটিউব ভিডিওটি পেয়ে যাবে এবং আপনার ইউটিউবে ভিডিও ভিউ অনেক বাড়বে।
এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক, টুইটার ,লিঙ্কডইন এগুলোতে আপনার ভিডিও শেয়ার করে আপনার ভিডিওগুলো অনেক বেশি ভিউ পেতে সাহায্য করবে।
ফেইসবুক এ আপনি একটি নির্দিষ্ট group এ গিয়ে আপনার ভিডিওগুলো কে সঠিক সময়ে শেয়ার করেন সেক্ষেত্রে আপনার ভিডিওগুলি ভিউ পাবার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
শেষ বক্তব্য:
আশা করব ইউটিউব এসইও সম্পর্কে আমাদের করা এই পোস্টটি আপনার ভাল লেগেছে।
আপনার যদি ইউটিউব ভিডিও এসইওএসে সম্পর্কে আরো কোন প্রশ্ন থাকে তো নিচে দিয়ে কমেন্ট বক্সে আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন আর যদি আপনি ইমেইল করতে চান তো আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এই মেইল এড্রেসে আমরা সরাসরি ইমেইল করে আপনাদের অভিমত জানতে পারবেন।
পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন